আশির দশকের শেষের দিকে (১৭৭৯) আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীকে পরাজিত করার ভেতর দিয়ে একদিকে যেমন মুসলমানদের বিশ্বকে করোতলগত করার বাসনা পুনর্জীবিত হয় একই সাথে ইরানে শিয়া শক্তির পুনরুত্থান ১৪০০ বছর আগের বিভাজনের পুনঃ সুত্রপাত করে। এর পরের দৃশ্যাবলী বায়স্কোপের দৃশ্যাবলীর মতনঃ ইরানের আনবিক শক্তি অর্জনের প্রয়াস, সাদ্দামের পতনের পর ইরাকে শিয়াদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠান, সিরিয়ার সাথে ইরাকের মিত্রতা, লেবাননে হিজবুল্লাহদের শক্তি বৃদ্ধি এবং ইসরাইলের সাথে সংঘর্ষ, অতি পুরাতন প্যালেস্টাইন ইস্যু, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কর্তৃক সুচিত আরব বসন্তের ঢেউয়ে হুসনে মোবারক এর পতন, ন্যাটো জোট ও সৌদি আরবের মিলিত আক্রমনে লিবিয়ার গাদ্দাফির পতন (যেখানে পশ্চিমা নিও লিবারেলিসম এবং অস্ত্র সাহায্য নিয়ে আইসিস তার বর্তমান অন্তর্নিহিত শক্তির অধিকারী ও ধীরে ধীরে Frankenstein এ রুপান্তরিত হচ্ছে)এবং সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট আসাদকে নিয়ে আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধ পূর্ববর্তী শত্রুতার নবজাগরণ!
‘A SHORT HISTORY OF SARACENS’ বইটা পড়া শুরু করেছিলাম এবং ভেতরে ভেতরে অনেকদূর এগিয়েছিলাম। তবে কখনই শেষ করা হয়নি। এই বইটাতে সারাসিনদের উথান পতন, তাদের অর্থনীতিক, সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ এবং অবক্ষয়ের ইতিহাস মোটামুটি নৈর্ব্যক্তিকভাবে তুলে আনা হয়েছে (এটা আমার ব্যক্তিগত ধারনা মাত্র, কারন তুলনা করার মতন আর কোন বইই আমি পড়িনি!)। এখানে উমাইয়া এবং আব্বাসি বংশের উত্থান পতন এবং শিয়া-সুন্নি সম্প্রদায়দ্বয়ের বিকাশের যে রক্তাক্ত ইতিহাস দেয়া আছে তা আমাকে সত্যিই ব্যথিত করেছিল। এমনকি আমাদের প্রিয় নবীর মৃত্যুর পরের শতাব্দীগুলোতে মুসলমানদের শৌর্য বীর্যের ইতিহাসের সমান্তরালে কলঙ্কের ইতিহাসো কম উঠে আসেনি এখানে! এই শৌর্য বীর্যের ইতিহাসও আমাদের নবী বেঁচে থাকলে কতোটা অনুমোদন করতেন সে সম্পর্কে আমার পূর্ণ সন্দেহ আছে! আজকের দিনের আইসিসের ইতিহাস একই সুত্রে গাঁথা বলেও আমার ধারনা।
আমি ওপরের অনুচ্ছেদের কোন ব্যাখ্যাতেই যাবো যাবনা! আমি শুধু “দুই পরাশক্তির বৈষম্য শুধু আইসিসকেই শক্তিশালী করবে, আর বৈরুত, প্যারিসের মত বিশ্বের আর ও অনেক বড় বড় শহরে এমনকি ছোট জনপদও নিরীহ মানুষের রক্তে ভেসে যাবে”- এই সত্যির প্রতিধ্বনি করছি!
No comments:
Post a Comment