ছোটোবেলায় আমাদের এক শিক্ষক ছিলেন; পড়াতেন সিভিকস । তো তিনি ক্লাসে এসে প্রায়ই আমজনতার সিভিক সেন্স নিয়ে কথা বলতেন। আমরা যে তার সিভিক সেন্স বিষয়ক লেকচার উপভোগ করতাম না তা নয়। কিন্তু আমাদের জন্য বেদনাদায়ক দৃশ্য ছিলো এই যে লেকচার দিয়ে তিনি ক্লাসের কোণায় থুথু ফেলতেন থু করে।
একটি কৌতুক বলি,
একজন চাষা আর ভদ্রলোকের তফাৎ কি?
একজন চাষা নাকের ময়লা ফোৎ করে ঝেড়ে ফেলে দেয় আর একজন ভদ্রলোক নাকের ময়লা রুমালে করে বাসায় নিয়ে আসে।
নাকের লোম কারো লম্বা লম্বা। রাস্তা ঘাটে দেখি কারো নাকের লোম এতোটাই দৃষ্টিগোচর যে গোফ বলে ভ্রম হয়, কানের লোম ও দৃষ্টিকটু ব্যাপার। আরো বিরক্তিকর যখন দেখা যায় কেউ পটাপট নাকের লোম ছিড়ছে।
তারপরো একটি বিষয়ে না বললেই নয়। আর তা হলো রাস্তার পাশে মূত্রত্যাগ। ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার হলো ঠিক যেখানে লেখা থাকে, এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ/ এখানে মুতিবেন না/ এখানে পেচ্ছাব করলে ৫০ টাকা জরিমানা ইত্যাদি সেখানেই বঙ্গ পুরুষ ছরছর করে মুতিবে। একই ভাবে যেখানে লেখা থাকে এখানে ময়লা ফেলা নিষেধ, পাবলিক ঐখানেই ময়লা ফেলিবে।
এমন না যে এই সমস্যা শুধুমাত্র ঢাকার বা বাংলাদেশে, খোজ খবর নিয়ে জানলাম লন্ডন নগরীতে ও এই সমস্যা প্রকট। জনসমাগম কম হয় এইরকম লিফটে, আন্ডারপাসে, নির্জন রাস্তায় উৎকট মূত্রের গন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি ফোন বুথেও। বাংলাদেশের সাথে একটাই পার্থক্য এই যে এখানে রাতের বেলা মাতাল রমণীরাও রাস্তায় পেসাব /প্রস্রাব করেন।
বাঙলাদেশে ফেরত যাই।
এইতো কদিন আগেই রাস্তাঘাটে মূত্রত্যাগ ঠেকাতে এক অভিনব পদ্ধতি নেয়া হয়েছে। ভিডিওটি দেখুন।
ভিডিও বা পদ্ধতি ও কার্যকারিতা নিয়ে আমার কিছু বলার অাছে তাই কিছু ফেসবুক পোষ্ট শেয়ার করছি:
“হয় স্বীকার করুন যে হিন্দু, খৃষ্টান, বৌদ্ধ ভাইয়েরা মুসলিম ভাইদের চেয়ে অনেক সভ্য (তারা মুত্র ত্যাগ করতে যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যায় না)
অথবা বলুন যে, যেখানে সেখানে মুত্র ত্যাগ করা একমাত্র মুসলমান ভাইদের জন্যই নিষিদ্ধ হল।
এই দেশটা তো সবার রে”
ঢাকা শহরে লোকজনের যত্রতত্র মূত্র বিসর্জনের যেই সমাধান ধর্ম মন্ত্রণালয় বের করেছে তা প্রমাণ করে আমাদের দেশের লোকজন কতটা না বুঝে ধর্ম পালন করে। বাংলার পরিবর্তে আরবীতে লিখা হচ্ছে, “এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ।” অথচ দেখা যাচ্ছে অনেকে সেই লিখাটিকে সালাম করছে। এই সমাধান সাময়িক ফলাফল আনলেও তার দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল খারাপ। মানুষকে আরো বেশী ধর্মান্ধ করে তুলবে এমন সমাধান। নিজ ভাষায় লিখা না বুঝে শুধুমাত্র পবিত্র কুর-আন শরীফের ভাষায় লিখা হয়েছে বলেই মানুষ মানছে। মানুষ কি আসলে বুঝে মানছে? নাকি আরবীতে কিছু একটা লিখা আছে বলে মানছে? তাহলে এক কাজ করা হোকসিটি কর্পোরেশন সমূহ প্রতিদিন আর রাস্তা ঝাড়ু দেয়ার দরকার কি? পুরো শহরে আরবীতে কিছু চিকা মারার ব্যবস্থা করা হোক, কেউ আর তা নোংরা করবে না।
সমাধান হতে পারতো অন্যভাবে। সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা। দুঃখিত অনেকেই এই সমাধানের প্রশংসা করলেও আমি পারলাম না।”
“রাস্তাঘাটে মূত্রত্যাগ বন্ধে ধর্ম টেনে আনার যে মানসিকতা সেটা রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারকে খুব ভালোভাবে ব্যখ্যা করে। সেই দিন আর দূরে নাই যেদিন জায়গায় জায়গায় পোস্টার দেখা যাবে, “কর দিন, বেহেশতের টিকেট কাটুন”, ইত্যাদি ইত্যাদি। বাংলা মুছে আরবি হরফ লেখার ভিডিও দেখে বাঙালির আহ্লাদে আটখানা হওয়ায় মাথা কুটতে ইচ্ছা করছে।”
এক্ষেত্রে ধর্মাশ্রয়ী হলে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান দের ক্ষেত্রে কি হবে?
এখানে সহজ করে বা মোটা দাগে বলা যায়, যেহেতু বাঙলাদেশে মুসলিম জনসংখা বেশি তাই বলা যায় রাস্তায় প্রস্রাব করা জনতার বেশিরভাগ ই মুসলমান। এখন লেখা হয়েছে আরবি তে। আর আরবি ভাষায় অজ্ঞ বেশিরভাগ মুসলমানরা ধরে নিচ্ছে এটা কোরানের আয়াত বা হাদিস। যদি তা নাও হয় অনেকেই শুধুমাত্র আরবি ভাষা হবার কারণে ঐ লেখাকে সম্মান করছে। এখন কথা হচ্ছে ওটা যে আরবি ভাষা তা কিন্তু বাঙলাদেশের প্রায় সবাই জানে, তা সে যে ধর্মেরই লোক হোক না ক্যানো। কিন্তু আজ না কাল তো পাবলিক জানবেই যে আরবিতে ওখানে লেখা, এইখানে মূত্রত্যাগ করা নিষেধ।যখন পাবলিক জানবে এটা আরবি আয়াত নয় তখন কি হবে?আরবি ভাষায় যে কোরান-হাদিস ছাড়া অন্য জিনিস ও আছে তা পাবলিক বুঝবে। তখন কি আবার ঐখানে পাবলিক মূত্রত্যাগ করা শুরু করবে ?
একটি কৌতুক বলি,
একজন চাষা আর ভদ্রলোকের তফাৎ কি?
একজন চাষা নাকের ময়লা ফোৎ করে ঝেড়ে ফেলে দেয় আর একজন ভদ্রলোক নাকের ময়লা রুমালে করে বাসায় নিয়ে আসে।
নাকের লোম কারো লম্বা লম্বা। রাস্তা ঘাটে দেখি কারো নাকের লোম এতোটাই দৃষ্টিগোচর যে গোফ বলে ভ্রম হয়, কানের লোম ও দৃষ্টিকটু ব্যাপার। আরো বিরক্তিকর যখন দেখা যায় কেউ পটাপট নাকের লোম ছিড়ছে।
তারপরো একটি বিষয়ে না বললেই নয়। আর তা হলো রাস্তার পাশে মূত্রত্যাগ। ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার হলো ঠিক যেখানে লেখা থাকে, এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ/ এখানে মুতিবেন না/ এখানে পেচ্ছাব করলে ৫০ টাকা জরিমানা ইত্যাদি সেখানেই বঙ্গ পুরুষ ছরছর করে মুতিবে। একই ভাবে যেখানে লেখা থাকে এখানে ময়লা ফেলা নিষেধ, পাবলিক ঐখানেই ময়লা ফেলিবে।
এমন না যে এই সমস্যা শুধুমাত্র ঢাকার বা বাংলাদেশে, খোজ খবর নিয়ে জানলাম লন্ডন নগরীতে ও এই সমস্যা প্রকট। জনসমাগম কম হয় এইরকম লিফটে, আন্ডারপাসে, নির্জন রাস্তায় উৎকট মূত্রের গন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি ফোন বুথেও। বাংলাদেশের সাথে একটাই পার্থক্য এই যে এখানে রাতের বেলা মাতাল রমণীরাও রাস্তায় পেসাব /প্রস্রাব করেন।
বাঙলাদেশে ফেরত যাই।
এইতো কদিন আগেই রাস্তাঘাটে মূত্রত্যাগ ঠেকাতে এক অভিনব পদ্ধতি নেয়া হয়েছে। ভিডিওটি দেখুন।
ভিডিও বা পদ্ধতি ও কার্যকারিতা নিয়ে আমার কিছু বলার অাছে তাই কিছু ফেসবুক পোষ্ট শেয়ার করছি:
“হয় স্বীকার করুন যে হিন্দু, খৃষ্টান, বৌদ্ধ ভাইয়েরা মুসলিম ভাইদের চেয়ে অনেক সভ্য (তারা মুত্র ত্যাগ করতে যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যায় না)
অথবা বলুন যে, যেখানে সেখানে মুত্র ত্যাগ করা একমাত্র মুসলমান ভাইদের জন্যই নিষিদ্ধ হল।
এই দেশটা তো সবার রে”
ঢাকা শহরে লোকজনের যত্রতত্র মূত্র বিসর্জনের যেই সমাধান ধর্ম মন্ত্রণালয় বের করেছে তা প্রমাণ করে আমাদের দেশের লোকজন কতটা না বুঝে ধর্ম পালন করে। বাংলার পরিবর্তে আরবীতে লিখা হচ্ছে, “এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ।” অথচ দেখা যাচ্ছে অনেকে সেই লিখাটিকে সালাম করছে। এই সমাধান সাময়িক ফলাফল আনলেও তার দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল খারাপ। মানুষকে আরো বেশী ধর্মান্ধ করে তুলবে এমন সমাধান। নিজ ভাষায় লিখা না বুঝে শুধুমাত্র পবিত্র কুর-আন শরীফের ভাষায় লিখা হয়েছে বলেই মানুষ মানছে। মানুষ কি আসলে বুঝে মানছে? নাকি আরবীতে কিছু একটা লিখা আছে বলে মানছে? তাহলে এক কাজ করা হোকসিটি কর্পোরেশন সমূহ প্রতিদিন আর রাস্তা ঝাড়ু দেয়ার দরকার কি? পুরো শহরে আরবীতে কিছু চিকা মারার ব্যবস্থা করা হোক, কেউ আর তা নোংরা করবে না।
সমাধান হতে পারতো অন্যভাবে। সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা। দুঃখিত অনেকেই এই সমাধানের প্রশংসা করলেও আমি পারলাম না।”
“রাস্তাঘাটে মূত্রত্যাগ বন্ধে ধর্ম টেনে আনার যে মানসিকতা সেটা রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারকে খুব ভালোভাবে ব্যখ্যা করে। সেই দিন আর দূরে নাই যেদিন জায়গায় জায়গায় পোস্টার দেখা যাবে, “কর দিন, বেহেশতের টিকেট কাটুন”, ইত্যাদি ইত্যাদি। বাংলা মুছে আরবি হরফ লেখার ভিডিও দেখে বাঙালির আহ্লাদে আটখানা হওয়ায় মাথা কুটতে ইচ্ছা করছে।”
এক্ষেত্রে ধর্মাশ্রয়ী হলে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান দের ক্ষেত্রে কি হবে?
এখানে সহজ করে বা মোটা দাগে বলা যায়, যেহেতু বাঙলাদেশে মুসলিম জনসংখা বেশি তাই বলা যায় রাস্তায় প্রস্রাব করা জনতার বেশিরভাগ ই মুসলমান। এখন লেখা হয়েছে আরবি তে। আর আরবি ভাষায় অজ্ঞ বেশিরভাগ মুসলমানরা ধরে নিচ্ছে এটা কোরানের আয়াত বা হাদিস। যদি তা নাও হয় অনেকেই শুধুমাত্র আরবি ভাষা হবার কারণে ঐ লেখাকে সম্মান করছে। এখন কথা হচ্ছে ওটা যে আরবি ভাষা তা কিন্তু বাঙলাদেশের প্রায় সবাই জানে, তা সে যে ধর্মেরই লোক হোক না ক্যানো। কিন্তু আজ না কাল তো পাবলিক জানবেই যে আরবিতে ওখানে লেখা, এইখানে মূত্রত্যাগ করা নিষেধ।যখন পাবলিক জানবে এটা আরবি আয়াত নয় তখন কি হবে?আরবি ভাষায় যে কোরান-হাদিস ছাড়া অন্য জিনিস ও আছে তা পাবলিক বুঝবে। তখন কি আবার ঐখানে পাবলিক মূত্রত্যাগ করা শুরু করবে ?
No comments:
Post a Comment