পরিবারের বাতি ছেলে, মা চেয়ে থাকে ছেলের উপার্জন কবে খাবে। বাবা আশা করে কবে তার ছেলে সংসারের হাল ধরবে বা অন্তত হালের কিছু অংশ ধরবে। আর বড় ছেলে হলে তো কথাই নেই। বাবার অবর্তমানে সেই সে অবস্থানে চলে আসে তা সেই ছেলের বয়স ১৫ হোক কি ২৫ ই হোক। সব দায়িত্ব এক প্রকার তার। এতে ওই ছেলেটির মানসিক অবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকে তা কেউ খোঁজ নেয়না।একটা সমস্যা যা আমাদের সমাজে পুরুষদের প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হতে হয় তা হল "টাকা কামানোর" চিন্তা। ব্যাপারটা যদি শুধু নিজের পায়ে দাঁড়ানোর মত মহৎ উদ্দেশ্য হত তাহলেও হত, কিন্তু তা না। সমাজের এই রীতির কারনে একটা ছেলেকে কী পরিমাণ মানসিক যন্ত্রনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তা কেউ ভাবে বলে আমার মনে হয় না। একটা মেয়ের জন্যে টাকা উপার্জন নিয়ে যত কথা শুনতে হয় তার চেয়ে কয়েক হাজার গুন বেশি শুনতে হয় একটা ছেলেকে। বিশাল একটা সংস্কারের বোঝা একটা ছেলেকে কৈশর থেকেই পার হতে হয়। এই চিত্র ধনী গরীব সব পরিবারে মোটামুটি একই।এতো গেল পরিবারের কথা, নিকটআত্মীয়, পাড়া প্রতিবেশির মানুষজনতো আছেই।"ওমা আপনার ছেলে এখনও চাকরি পায়নি?","ও পেয়েছে? কত কামায়??"
"মাত্র!!! এই কামাই এ চলে!!","বিয়ে শাদি দিবেন না!! সংসার চলবে কীভাবে!!",এসব কথা তো শুনতেই হয়।প্রেমের বাজারের কথা নাই বলি। ফাস্ট ফুডের দোকানে না বসতে পারলে আর দামী গিফট দিতে না পারলে কয়জন মেয়ে আছে ওই ছেলের সাথে প্রেম করবে তা জানা আছে।স্বপ্ন দেখার পর ভাঙ্গলে কষ্ট হয়, স্বপ্ন দেখার অধিকারও যদি না থাকে তবে কেমন লাগে?কষ্ট পেয়ে হাত পা ছড়িয়ে বসে থাকার সময়ও তো নেই। ছুটতে হচ্ছে, টাকা কামানোর মেশিন হয়ে, আরও টাকা চাই। নাহলে সমাজে মান সম্মান প্রতিপত্তি কীভাবে আসবে? একারনেই পি এইচ ডি করা শিক্ষকের চেয়ে ম্যাট্রিক পাস করা কোটিপতির সম্মান এই সমাজে বেশি। অল্প বয়সে এই কষ্ট গুলো পেতে পেতে এক সময় এই ছেলে গুলো বয়স হলে একেকজন পাষণ্ড হয়ে ওঠে। কেন হয় তার খোঁজ কয়জন রাখে?লেখাটা অনেক বড় হয়ে গেল। আমার ধারনা ভুলও হতে পারে। হঠাৎ মনে হল বিষয়টা তাই সবার সাথে বললাম। পারলে একটু ভেবে দেখবেন।
No comments:
Post a Comment