“বাংলা বাতাস” বলেও একটা জিনিস আছে। একটা শিশু জন্ম গ্রহণ করার পরে তার বেড়ে উঠার জন্য শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ ইত্যাদি লাগে। আর এই বঙ্গ এলাকায় যাদের জন্ম তাদের লাগুক আর না লাগুক অটোমেটিক ভাবে বাংলাবাতাস লেগে যায়। এই বাতাস কিভাবে লাগেসেটা জানিনা তবে এর প্রভাব অচিরেই আপনিআপনার আশেপাশে দেখতে পাবেন। জিজ্ঞেস করতে পারেন কি সেই প্রভাব ? আরে বাবা একটু দাঁড়াও না। রচনার লাইন বাড়াতে হবে না। তা না হলে নম্বর পাব নাকি? “মাইরের মধ্যে যেমন আমাদের দেশে ভিটামিন পাওয়া যায়”, তেমনি এই বাংলা বাতাসেও এমন এক ভিটামিন আছে সেটা শুধু বাঙ্গালীর শরীর জুড়ায় না, মেধাকে বিকশিত করে দারুণ ভাবে। এর প্রভাব শরীরের গঠন ছাড়া আর সব জায়গাতে পাবেন। এর মধ্যে পেশা, সমাজ, আচার-আচরণ, বুদ্ধি, বক্তব্য, সামাজিক যোগাযোগের সাইট সব খানেই পাবেন।
পেশাতে বাংলা বাতাসের প্রভাবঃ
এই যেমন ধরেন, বাংলাদেশে যে লোক দুধ বিক্রি করে সে পানি না মিশিয়ে থাকতে পারবেনা, রিকশা যে চালায় ১৫ টাকার ভাড়া ২৫ টাকা না নিয়ে থাকতে পারবেনা, ভিক্ষা করে মিথ্যা কথা না বলে থাকতে পারে না, সরকারী চাকুরী করে ঘুষ ছাড়া থাকতে পারে না,পুলিশ আর সাংবাদিকের কথা আর বললাম না,যারা রাজনীতি করে, পাবলিককে চিপায় না ফেলে থাকতে পারে না। আরো শুনবেন, ব্যবসা করে ট্যাক্স না দিয়ে, বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট না তৈরি কোরে ব্যবসা করতে পারবেনা। শিক্ষক হলে নিজের বিদ্যালয়ে পড়ানোর চেয়ে প্রাইভেট আর অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতে ব্যস্ত থাকবে। আর ডাক্তার হলে ডাক্তারি বাদ দিয়ে ড্যাব আর শাহবাগে পড়ে থাকবে, রোগী সামলাবে ডায়গোনসিস সেন্টার। যে পেশাতেই যাক না কেনো, বেশীর ভাগ বাঙ্গালী সেটার দফা-রফা না করলে তার শরীর জুড়াবে না। এরকম আরো কোনো দেশে কি সম্ভব? বাংলা বাতাস ছাড়া আর কোনো কিছুর প্রভাব আছে বলে তো মনে হয় না।।
সমাজে বাংলা বাতাসের প্রভাবঃ“বাংলা বাতাস” এর সবচেয়ে বেশী প্রভাব দেখা যায় আমাদের বাংলাদেশের সমাজে। যেমন ধরেন, পরিবারে। ছেলে-মেয়ে ভাল করলে মা-বাবা কাড়াকাড়ি লাগে এটা আমার ছেলে, আমার মেয়ে; আর খারাপ করলে বলবে তোমার ছেলে- তোমার মেয়ে। রাস্তা দিয়ে হাঁটবেন মুরুব্বী গোছের কেউ যাচ্ছে, চুল-দাড়ীতে পাক ধরেছে, সালাম দিবেন না, বলবে “ছেলে বেয়াদব”। অথচ ইসলামের কোথাও লিখা নাই যে ছোটদের আগে সালাম দিতে হবে। আরে মুরুব্বী আপনিও তো সালাম দিতে পারতেন। তাহলেও তো ছেলেটা লজ্জায় পোরে পরের দিন আপনাকে সালাম দিত। এত গেলে টুকিটাকি। বাঙ্গালী সমাজ দুভাগে বিভক্ত। আগে ছিল হিন্দু-মুসলমান (এখন আরো আছে), তারপর পূর্ব বঙ্গ আর পশ্চিম বঙ্গ। আরো পরে আওয়ামী লীগ – বিএনপি , খেলাতে আবহনী- মোহামেডান, ব্রাজিল -আর্জেন্টিনা, কিংবা হালের শাহবাগী- হেফাজতে ইসলাম, আস্তিক-নাস্তিক। মোটকথা, বাঙ্গালী সমাজে “বাংলা বাতাসের” প্রভাব বাঙ্গালীকে জন্ম-জন্মাতরে যে কোন বিষয়ে দুভাগে ভাগ করে রেখেছে।
No comments:
Post a Comment